আরাকানে মুসলমানদের ২০০ বছরের ‘স্বর্গরাজ্য’

bangladesh-myanmar-unrest-rohingya-refugee

আরাকানে মুসলমানদের ২০০ বছরের ‘স্বর্গরাজ্য’ শিরোনামে ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭,মঙ্গলবার, ১৪:৪৮ এ দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় প্রকাশিত।

লেখক: মেহেদী হাসান

মধ্য যুগে দুই শ’ বছর পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যচর্চার প্রাণকেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের আজকের রাখাইন বা আরাকান রাজসভা। মহাকবি আলাওল, দৌলত কাজী, কোরেশি মাগন ঠাকুর, নসরুল্লাহ খান এরা সবাই ছিলেন আরাকান রাজ্যের সভাকবি বা রাজদরবারের কবি। আজকের যে বাংলা সাহিত্য তার অন্যতম ভিত্তি আরাকানের রাজসভা। ১৫ শ’ সালের শুরু থেকে ১৬ শ’ সালের শেষ পর্যন্ত আরাকানের রাজসভা স্মরণীয় হয়ে আছে বাংলা সাহিত্য চর্চা ও পৃষ্ঠপোষকতার জন্য। দীর্ঘকাল আরাকান রাজ্য পরিচালিত হয় ইসলাম ও মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে। আরাকানের ওপর ইসলাম ও মুসলমানদের প্রভাব এতটাই ছিল যে, শত বছরেরও অধিক সময় আরাকানের অমুসলিম শাসকেরা মুসলমান নামের উপাধি গ্রহণ করে শাসন কার্য পরিচালনা করতেন। প্রাচুর্যে ভরপুর ফুলে ফলে সুশোভিত স্বর্গরাজ্য হিসেবে বিবেচিত হাজার বছরের স্বাধীন আরাকান রাজ্যের অনেক রাজা ও অমাত্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন তাদের উদার পৃষ্ঠপোষকতার জন্য। বাংলা সাহিত্য তাই ঋণী আরাকানের রাজসভার কাছে। পদ্মাবতী, চন্দ্রাবতী, সতী ময়না লোর চন্দ্রানী, হপ্ত পয়কর, সয়ফুল মুলক বদিউজ্জামান, শরিয়তনামা, দারা সেকেন্দারনামার মতো অনেক কালজয়ী কাব্য, মহাকাব্য রচিত হয়েছে আরাকানে। এসব কাব্যে উঠে এসেছে আরাকান রাজ্যের অনেক অজানা ইতিহাস মুসলমানদের গৌরবময় অধ্যায়।

আরাকান রোসাঙ্গ বা রোসাঙ্গ রাজ্য নামেও পরিচিত। তখনকার কবি সাহিত্যিকেরা আরাকানকে রোসাঙ্গ রাজ বলে অভিহিত করেছেন।

১৬ শতকের কবি দৌলত কাজীর ‘সতী ময়না লোর চন্দ্রানী’ কাব্যে রোসাঙ্গ রাজ বা আরাকানের পরিচয় ফুটে উঠেছে এভাবে, ‘কর্ণফুল নদী কূলে আছে এক পুরী, রোসাঙ্গ নগর নাম স্বর্গ অবতারি। তাহাতে মগধ বংশ ক্রমে বুদ্ধাচার। নাম শ্রী সুধর্ম রাজা ধর্ম অবতার।’

এ কাব্যে আরো উল্লেখ করা হয়েছে আরাকানের রাজা সুধর্ম ছিলেন খুব শক্তিশালী। তার ১৫ শ’ হাতির এক বিশাল বাহিনী ছিল। আর সৈন্যবাহিনীতে ছিল ‘অযুতে অযুতে সৈন্য অশ্ব নাহি সীমা।’

এ কাব্যগ্রন্থ রোসাঙ্গ রাজসভার লস্কর উজির আশরাফ খানের অনুরোধে রচিত হয়। এ কাব্য পর্যালোচনা করে অনেক ইতিহাস গবেষক বলেছেন বার্মার মগরা ভারতের মগধ রাজ্য থেকে সেখানে গেছে এবং ক্রমে বৌদ্ধ ধর্মে দিক্ষিত হয়।

মহাকবি আলাওলের কর্মজীবন কেটেছে আরাকানে। তার মৃত্যুও হয় সেখানে। তিনি ছিলেন আরাকানের অশ্বারোহী বাহিনীর সদস্য। অনন্য সাধারণ কাব্য প্রতিভার গুণে শেষ পর্যন্ত তিনি আরাকানের সভাকবি হন। তার সময়েই মোগল সম্রাট শাহজাহানের ছেলে শাহ সুজা আশ্রয় নেন আরাকানে। ভাই সম্রাট আরোঙ্গজেবের সাথে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে তিনি আরাকানে আশ্রয় নেন। আরাকানের তরুণ রাজা তখন চন্দ্র সু ধর্মা। তিনি মুগ্ধ হন শাহ সুজার মেয়ে আমিনাকে দেখে। তাকে বিয়ে করতে চান। কিন্তু রাজি হননি শাহ সুজা। এ নিয়ে সৃষ্ট সঙ্ঘাতে শেষ পর্যন্ত শাহ সুজা তার স্ত্রী, তিন ছেলেমেয়ে ও প্রায় দেড় হাজার অনুচরসহ নির্মমভাবে নিহত হন। এসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মহাকবি আলাওল। এমনকি শাহ সুজার পক্ষ অবলম্বনের দায়ে আলাওলকেও জেলে নেয়া হয় তখন। সে ঘটনা কবি আলাওল বর্ণনা করেছেন সয়ফুল মুলক বদিউজ্জামান কাব্যগ্রন্থে। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন মির্জা নামক এক পাপিষ্ঠের ষড়যন্ত্রে তার মতো অনেককেই তখন জেলে যেতে হয়েছিল। শাহ সুজা হত্যার পর অস্থিরতার সুযোগে অনেক ষড়যন্ত্রকারী তখন রাজার কান ভারী করেছিলেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে।

শাহ সুজার হত্যা এবং কবি আলাওলের জেলে যাওয়া সম্পর্কে কবি আলাওল লিখেছেন ‘তার পাছে সাহা সুজা নৃপ কুলেশ্বর। দৈব পরিপাক আইল রোসাঙ্গ শহর। রোসাঙ্গ নৃপতি সঙ্গে হৈল বিসম্বাদ। আপনার দোষ হোস্তে পাইল অবসাদ। যতেক মুসলমান তান সঙ্গে ছিল। নৃপতির শাস্তি পাইল সর্বলোক মইল। মির্জা নামে এক পাপী সত্য ধর্মভ্রষ্ট। শালেত উঠিল পাপী লোক করি নষ্ট। যার সঙ্গে ছিল তার তিল মন্দভাব। অপবাদে নষ্ট করি পাইল নর্ক লাভ। মরণ নিকটে জানি ইচ্ছাগত পাপ। যেজনে করএ সেই নর্ক মাগে আপ। এজিদ প্রকৃতি সেই দাসীর নন্দন। মিথ্যা কহি কত লোক করাইল বন্ধন। আয়ুযুক্ত সব মুক্ত করিল অস্থানে। পাপরাশি ধর্মনাশি মরিল মৈল শাল স্থানে। বিনা অপরাধে মোরে দিল পাপ ছারে। না পাইয়া বিচার পড়িলুং কারাগারে। বহুল যন্ত্রণা দুঃখ পাইলুং কর্কশ। গর্ভবাস সম্পিল পঞ্চাস দিবস।’

কবি আলাওলের কাব্যে দেখা যায় শাহ সুজার নির্মম হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি শাহ সুজাকেই দোষী সাব্যস্ত করেছেন। শাহ সুজার বিরুদ্ধে কবি আলাওলের অভিযোগ বিষয়ে অনেক ইতিহাস গবেষকের প্রশ্ন রয়েছে। কারণ তিনি ছিলেন সভাকবি। সভাকবি হয়ে রাজার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা সম্ভব ছিল কি না সেটি প্রশ্ন। তবে অনেকে কবি আলাওলের এ অভিযোগকে সত্য বলে মনে করেন। তাদের মতে শাহ সুজা আরাকানে আশ্রয় পাবার পর আরাকানের রাজা চন্দ্র সুধর্মাকে উৎখাতের জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন। তখন রাজার প্রায় সব প্রধান কর্মকর্তা ছিল মুসলমান। শাহ সুজা এসব মুসলমানের আহ্বান জানান তার পক্ষ অবলম্বনের জন্য। তবে তারা শাহ সুজার পক্ষ নিতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত সঙ্ঘাতে সব অনুচরসহ নিহত হন শাহ সুজা।

শাহ সুজার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আরাকানের রাজশক্তির সাথে মুসলমানদের বিবাদ-সঙ্ঘাত শুরু হয়। ১৬৬১ সালে শাহ সুজার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শুরু হয় হাজার বছরের সমৃদ্ধ প্রাচুর্যে ভরপুর স্বাধীন আরাকানের পতনকাল। শাহ সুজার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভারত, বাংলাদেশ ও আরাকানের মুসলমানদের মনে গভীর দাগ কাটে। রাজ্যে শুরু হয় তীব্র অস্থিরতা আর অশান্তি। ঘটে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে আরাকান সাম্রাজ্য। অনেক দিন পর আরাকানে আবার শান্তি ফিরে এলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ১৭৮৪ সালে বর্মিদের কাছে চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা হারায় আরাকান যা আজো তারা ফিরে পায়নি এবং শেষ পর্যন্ত সমৃদ্ধ আরাকানের রোহিঙ্গারা আজ রাষ্ট্রহীন নাগরিক, বিশ্বে সবচেয়ে হতভাগা সম্প্রদায়।

রাজা থদোমিস্তারের সময় মহাকবি আলাওল আরাকানে যান। থদোমিস্তারের রাজত্বকাল ছিল ১৬৪৫ থেকে ১৬৫২। কোরেশি মাগন ঠাকুর ছিলেন থদোমিস্তারের প্রধানমন্ত্রী। কোরেশি মাগন ঠাকুর রচিত চন্দ্রাবতীতে রয়েছে রসুল প্রশংসা। মাগন ঠাকুর ছিলেন প্রচার বিমুখ। তার কাব্যে নিজের কোনো পরিচয় নেই। মাগন ঠাকুরের পরিচয় রয়েছে কবি আলাওলের কাব্যে। সেখানে তিনি তাকে ছিদ্দিক বংশীয় বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরব থেকে আগত সিদ্দিক বংশীয় মুসলমান ছিলেন। কুরাইশ থেকে তার নাম কোরেশী হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। আর কবি আলাওলের বর্ণনায় দেখা যায় মাগন ঠাকুরের বাবা অনেক দিন ধরে ছিলেন নিঃসন্তান। সে কারণে স্রষ্টার কাছে অনেক ভিক্ষা মেগে তিনি এক সন্তানের বাবা হন। সে কারণে সন্তানের নাম রাখা হয় মাগন। আর ঠাকুর ছিল তাদের পারিবারিক উপাধি। এ কারণে তার নাম হয় কোরেশী মাগন ঠাকুর।

ঘটনাক্রমে কোরেশী মাগন ঠাকুরের ওপর আরাকান শাসনেরও ভার পড়ে ১৬৫২ সালে। আরবি, ফার্সি, মঘী ও হিন্দুস্তানি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন তিনি। তার বাবাও ছিলেন আরাকানের সৈন্য মন্ত্রী। আরাকানে ইসলাম প্রচারেও কোরেশী মাগন ঠাকুরের নাম স্মরণীয় হয়ে আছে। কবি আলাওলের কাব্যে তার উল্লেখ রয়েছে। ‘ওলামা, সৈয়দ, শেখ যত পরদেশী/পোষন্ত আদর করি বহু স্নেহবাসি।’

কোরেশি মাগন ঠাকুরের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ চন্দ্রাবতী আরাকানের রাজসভায় লিখিত। তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। মহাকবি আলাওলের পদ্মাবতী রচিত হয় কোরেশী মাগন ঠাকুরের পৃষ্ঠপোষকতায়।

বাংলাদেশের বর্তমান মাদারীপুরের ফতেহাবাদে জন্ম নেয়া কবি আলাওলকে মধ্যযুগের কবিদের শিরোমনি আখ্যায়িত করা হয়। বাংলা, আরবি, ফার্সি, সংস্কৃত প্রভৃতি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন তিনি।

১৫৩৫ সালে রাজা শ্রী সুধর্মার অভিষেক হয় আরাকানে। অভিষেক অনুষ্ঠানের বর্ণনা পাওয়া যায় পর্তুগীজ পর্যটক অগাস্টিন মঙ্ক সাবাস্টিয়ান মেনরিখের বর্ণনায়। মেনরিখ ছিলেন একজন ধর্মযাজক। তিনি যে চরম মুসলিমবিদ্বেষী ছিলেন তা ফুটে উঠেছে তার লেখায়। যেমন তিনি মদিনা শব্দের আগে ঘৃণিত শব্দ ব্যবহার করেছেন। রাজদরবারের একজন প্রভাবশালী মুসলমানকে তিনি ভণ্ডপীর, ভণ্ড দরবেশ বলে উল্লেখ করেছেন। এ রকম মুসলিমবিদ্বেষী একজন পর্যটকের লেখায়ও ১৬৩৫ সালে আরাকান রাজার অভিষেক অনুষ্ঠানের যে বিবরণ পাওয়া যায় তাতে খুব সহজেই অনুমান করা যায় দীর্ঘকাল ধরে এ রাজ্যে মুসলমানদের মর্যাদা, প্রভাব প্রতিপত্তির অবস্থা।

মেনরিখ লিখেছেন, ‘শ্রী সুধর্মা রাজার একজন উপদেষ্টা আছেন যিনি ধর্মে মুসলান। এই ভণ্ড দরবেশ লোকটি নাকি রাজাকে বলত যে, তিনি রাজাকে অদৃশ্য ও অপ্রতিরোধ্য করে দিল্লি, পেগু ও সিয়ামের সম্রাটে রূপান্তর করে দিতে পারবেন।’

অভিষেক সম্পর্কে মেনরিখ লিখেছেন, ‘অনুষ্ঠানে মুসলিম ইউনিটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কুচকাওয়াজের সূচনা হয় মুসলমান অশ্বারোহী বাহিনীর মাধ্যমে যার নেতৃত্বে ছিলেন জনৈক মুসলিম কমান্ডার। আর সেই ভণ্ডপীরটি রৌপ্যখচিত অলঙ্কারে সুশোভিত মখমলের সবুজ পোশাক পরিধান করে জাঁকজমকপূর্ণভাবে সাজানো সাদা একটি আরবীয় ঘোড়ার ওপর আরোহণ করে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের সর্বাগ্রে অবস্থান নেন। তার পেছনে ছয় শ’ অশ্বারোহী বাহিনী। এই বাহিনীর সৈন্যদের চোখে মুখে ভাসছিল ভণ্ডপীরের দেখানো স্বর্গের কল্পিত স্বপ্নের আনন্দ। সবার পোশাক ছিল সবুজ। তাদের গায়ের বাম কাঁধ হতে ঝুলছিল সবুজ রঙে আচ্ছাদিত ধনুক। বাম পাশে বাঁধা ছিল সুদৃশ্য তুনীর যার ক্রসবেল্ট হতে ঝুলছিল রূপার প্রলেপ লাগানো বাঁকা শমশের। সকল ঘোড়াকে সবুজ সিল্কের কাপড়ে সাজানো হয়েছিল।’

ইতিহাস গবেষকদের মতে মেনরিখের লেখায় বর্ণিত এই ভণ্ডপীর ছিলেন মূলত লস্কর উজির আশরাফ খান। তিনি ছিলেন একজন খাঁটি মুসলমান। আরাকান রাজ দরবারে তার প্রভাব সম্পর্কে মেনরিখসহ পর্তুগিজদের কোনো ধারণাই ছিল না। ঘটনাক্রমে দীর্ঘ সময় আরাকান শাসন করেছেন আশরাফ খান। দৌলত কাজীর সতী ময়না লোর চন্দ্রানী কাব্যে বর্ণিত রয়েছে রাজা সুধর্মার অভিষেক অনুষ্ঠানের আগে রাজ জ্যোতিষ জানান ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরের মধ্যে মারা যাবেন রাজা। তাই তখন আরাকানের রাজ মাতা অভিষেক অনুষ্ঠান বাতিল করে সব ক্ষমতা লস্কর উজির আশরাফ খানের হাতে অর্পণ করেন এবং তিনিই রাজ্য পারিচালনা করেন।

আশরাফ খান ডাচদের কাছে চাল বিক্রির জন্য উচ্চ দাম নির্ধারণ করেছিলেন। সে কারণেণ তারা তার ওপর খ্যাপা ছিল বলে মনে করেন অনেক গবেষক। মহাকবি দৌলত কাজী আশরাফ খানের প্রভাব সম্পর্কে লিখেছেন, ‘ধর্মপাত্র শ্রীযুক্ত আশরাফ খান। হানাফি মাযহাব ধরে চিন্তি খান্দান। ইমান রতন পালে প্রাণের ভেতর। ইসলামের অলঙ্কার শোভে কলেবর।’

দৌলত কাজী আরো লিখেছেন ‘শ্রী আশরাফ খান লস্কর উজির। যাহার প্রতাপ- বজ্রে চূর্ণ অরি শির।’

১৬৬০ সালে যখন মোগল যুবরাজ আরাকানে যান তখন চন্দ্র সুধর্মা ছিলেন আরাকানের রাজা। রাজা চন্দ্র সুধর্মার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নবরাজ মজলিশ। তিনিই চন্দ্র সু ধর্মার অভিষেকে শপথ বাক্য পাঠ করান। এ সম্পর্কে মহাকবি আলাওল লিখেছেন ‘হেন ধর্মশীল রাজা অতুল মহত্ত। মজলিশ ধর্মরাজ তান মহামাত্য। রোসাঙ্গ দেশত আছে যত মুসলমান। মহাপাত্র মজলিশ সবার প্রধান। মজলিশ পাত্রের মহত্ত গুণ এবে। নরপতি সবর্গ আরোহণ হৈল যবে। যুবরাজ আইশে যবে পাটে বসিবার। দণ্ডাইল পূর্বমুখে তক্তের বাহিরে। মজলিশ পরি দিব্য বস্ত্র আভরণ। সম্মুখে দণ্ডই করে দড়াই বচন। পুত্রবত প্রজারে পালিবে নিরন্তর। না করিলে ছলবল লোকের ওপর।’

এন এম হাবিব উল্লাহ তার রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস বইয়ে লিখেছেন, আরাকান তথা রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস মুসলমানদের গৌরবের ইতিহাস। রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস বিষয়ক জ্ঞান আমাদেরকে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন একটি জাতি হিসেবে ভাবতে উজ্জীবিত করবে।

Published by Sagir Hussain Khan

Hello World! I'm Sagir Hussain Khan! if you want to connect with me find me at twitter with @sagir42 হেল্লো বিশ্ববাসী! আমি সগীর হোসাইন খান। আমার সাথে যুক্ত হতে চাইলে টুইটারে আমাকে খুঁজে নিতে পারেন @sagir42 নামে।

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.